ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী চাষাবাদ
শাহাদাত হোসেন তিতু
স্বল্প খরচে অধিক পুষ্টিসর্ম্পূন সূর্যমুখী চাষাবাদ ফরিদপুরে দিনে দিনেই বাড়ছে। ফরিদপুর বিএডিসির ডলি ও তৈল বীজ উৎপাদন খামারে সূর্যমুখী বীজ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। মাঠ ভরা হলুদ সবুজে সমারোহে এই বাগানগুলো দশানার্থীর বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। ভীড় করছে শিশু থেকে বৃদ্ধরাও। বেশী বেশী সূযমুখী চাষাবাদ করা গেলে সাধারন মানুষ এই তৈল ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করে সংশ্লিস্টরা।
ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় শতাধিক কৃষক চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী চাষবাদ করেছে। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। ফসল ঘরে তোলার সময়ে পরিপূর্ন ফুল ফোটে বিধায় প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যে সাজে বাগানগুলো, তাই দশানার্থীর ভীড় এড়াতে বাড়তি লোক নিয়োগ করে হ্যান্ড মাইকে গান বাজিয়ে ও বাশী বাজিয়ে পাখি ও দশানার্থীদের নিয়ন্ত্রন করতে হয়।
সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। একরে ৮০০ থেকে ৯০০ কেজিী উৎপাদন হয়। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৫০হাজার টাকা খরচ হয়। একরপ্রতি জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৯০ থেকে ১ লক্ষ টাকা বিক্রি করা যায়। বিএডিসি বীজ বিভাগ চাষীদেরকে বীজ সরবরাহ করে থাকে। জেলা ছাড়িয়ে অন্য জেলায় রয়েছে এর ব্যাপক চাষাবাদ।
সুদুর টাঙ্গাইল থেকে আগত দর্শনাথী লিজা,রাজবাড়ীর মিষ্টি ও জেলা শহরের এক যুবক জানায়, সূর্যমূখী ফুল থেকে তৈল হয় জানা থাকলেও ব্যাপকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়নি এখনও। তবে এর গুনাগুন সম্পর্কে ধারনা অনেকেরই জানা। অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরল মুক্ত। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চাইতে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশী পুষ্টি সমৃদ্ধ। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এই তেল মানব দেহের মহাওষুধ হিসাবে ভূমিকা পালন করছে। আর সে কারনেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখীর চাষবাদ।
ফরিদপুরের ডাল ও তৈল বীজ উৎপাদন খামার, বিএডিসির উপ- পরিচালক, মাহমুদুল ইসলাম খান জিয়া, জানান ফরিদপুর বিএডিসি বীজ ভবনের খামারে ২ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ করা হয়েছে। এ খামার থেকে উৎপাদিত বীজ দিয়ে ফরিদপুর জোনের ১০০জন চাষী সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছেন। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটানোর পরে দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদ পুরন করা হচ্ছে। সাধারন যে তৈল জাতীয় ফসল আছে, তার চাইতে সূর্যমুখী বীজে তৈলের পরিমান ৪২ থেকে ৪৪শতাংশ বেশী। এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবনকাল ও লাভ জনক। সে কারনেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। দেশে বীজের চাহিদা আছে ৩২.১১ মেট্রিক টন, বিএডিসি সাড়ে ১১ টনের মত উৎপাদন করে থাকে ।
Leave a Reply