ফরিদপুর মেডিকেলের পর্দা কেলেঙ্কারিতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) বহুল আলোচিত পর্দা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৭ আগস্ট অভিযোগপত্রটি ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জমা দেওয়া হয়। এ মামলায় আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ৯ জুলাই দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হকের (তদন্ত) সই করা এক চিঠিতে অভিযোগপত্রটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর পর্দা ও সরঞ্জামাদি কেনাকাটায় ১০ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনায় মামলা করে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী মামলাটি করেছিলেন।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন, মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফররুখ আহমেদ, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডা. বরুণ কান্তি বিশ্বাস, সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট (চক্ষু বিভাগ) ডা. এনামুল হক, সাবেক অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. শেখ আবদুল ফাত্তাহ, সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি) ডা. মিজানুর রহমান, সাবেক আরএমও ডা. শফিক উল্লাহ, একই হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার ওমর ফারুক, স্টোরকিপার আবদুর রাজ্জাক, ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার আলমগীর ফকির, ফরিদপুর গণপূর্ত উপবিভাগের সাবেক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আবদুস সাত্তার, রাজধানীর মহাখালীর ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) মিয়া মোর্তজা হোসাইন এবং মেসার্স আলী ট্রেডার্সের মালিক আলমগীর কবির।
অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (দন্ত বিভাগ) ডা. গণপতি বিশ্বাস শুভ, একই হাসপাতালের সাবেক জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ডা. মীনাক্ষী চাকমা ও সাবেক প্যাথলজিস্ট ডা. এ এইচ এম নুরুল ইসলাম।
ফরিদপুর দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং উচ্চ মূল্যে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০১৯ সালের ২০ আগস্ট ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। পরবর্তী সময়ে অভিযোগটির অনুসন্ধান করে মামলা করে দুদক। পরে দীর্ঘ যাচাই-বাছাই ও তদন্ত শেষে ১৪ জনকে চূড়ান্ত আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ফরিদপুর দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের আদেশ পাওয়ার পর ১৪ আসামির বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
Leave a Reply